Site icon Jamuna Television

আবে’র সফরের মধ্যেই ইরান উপকূলে জাপানি ট্যাংকারে হামলা

ইরান সফরে রয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। এ সফরের মাঝখানেই ওমান উপসাগরে তার দেশের একটি তেলের ট্যাংকারে হামলা চালানো হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে নরওয়ের একটি ট্যাংকারও। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে ওমান উপসাগরের ইরান উপকূল।

ঠিক ওই সময় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সঙ্গে বৈঠক করছিলেন আবে। এ হামলার ঘটনাকে ‘সন্দেহজনক’ আখ্যায়িত করেছে তেহরান। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার সংকট সমাধানে মধ্যস্থতার উদ্দেশ্যে বুধবারই তেহরান পৌঁছান আবে। পৌঁছার পর রাতেই দেশটির প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানির সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করেন।

এরপর যেৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে রুহানি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও উত্তেজনা হ্রাসের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। উভয় দেশই মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।

ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি জাপানি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, আমরা মধ্যপ্রাচ্যে কোনো যুদ্ধের সূচনাকারী হব না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও নয়। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো যুদ্ধ শুরু করা হয়, তাহলে আমরা অত্যন্ত কঠোর জবাব দেব। ইরানের ওপর মার্কিন অবরোধের কারণেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করে রুহানি।

এ সময় আবে বলেন, ইরানকে ঘিরে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনে জাপান ভূমিকা রাখতে চায়। এ সময় তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শানি্ত ও স্থিতিশীলতাকে গোটা বিশ্বের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উলে্লখ করেন।

পরদিন সকালে সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন আবে। বৈঠকের সময়ই ওমান সাগরে তেলের ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

আক্রান্ত ট্যাংকার দুটির একটি জাপানের মালিকানাধীন। ট্যাংকার দুটিতে টর্পেডো হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনটি বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায় এমপি ফ্রন্ট আলটিয়ারে। ওমান সাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে ‘দুর্ঘটনায়’ দুটি তেলবাহী ট্যাংকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে মার্কিন পঞ্চম নেৌবহর।

এই ঘটনায় ‘তদন্ত’ শুরু হয়েছে বলে যুক্তরাজ্য নিশ্চিত করেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, দুটি ট্যাংকার আগুনে পুড়ে গেছে এবং উভয় জাহাজের কর্মীদের উদ্ধার করা হয়েছে এবং তারা এখন নিরাপদ রয়েছে।

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চরম উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থার মধ্যেই এ দুর্ঘটনা ঘটল। গত মাসেও উপসাগরীয় দুটি তেলবাহী জাহাজে হামলার ঘটনা ঘটে, যেখানে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা হামলার দায় স্বীকার করেছিল।

গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলের নিকটবর্তী এলাকায় চারটি তেলবাহী জাহাজে একটি ‘গুপ্ত হামলা’ হয়। হামলার শিকার জাহাজের দুটি ছিল সেৌদি আরবের মালিকানাধীন।

এই হামলার জন্য ইরানকে দোষারোপ করা হয়েছে, যদিও ইরানের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ঠিক এর একদিন পরেই, ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা দুটি সৌদি তেল সহায়তা কেন্দ্রস্থলকে লক্ষ্য করে একটি ড্রোন হামলা চালায়।

Exit mobile version