Site icon Jamuna Television

রিহ্যাবে’র মিটিংয়ে অস্ত্রের মহড়া!

অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে বেসরকারি আবাসন নির্মাণকারীদের সংগঠন-রিহ্যাব-এ। প্রথমবারের মতো বোর্ড মিটিং রুমে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে বহিরাগতদের হামলা ও এক সহ-সভাপতিকে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেয়ার পর, দু’গ্রুপের পাল্টা-পাল্টি মামলায় চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। যেকোনো সময় আবারো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কায় রিহ্যাব অফিসে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন অনেক সদস্য। অস্ত্রসহ বহিরাগতদের হামলার ঘটনায়, শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতাসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১০ জন পরিচালক চিঠি দিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতির কাছে।

রাজধানীর বাংলামটর লিঙ্ক রোডে রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-রিহেবের প্রধান কার্যালয়। ১১ অক্টোবর বিকেলে বোর্ডরুমে চলছিলো – সংগঠনের ভাবমূর্তি রক্ষা কমিটির বিশেষ সভা। সিসিটিভির ক্যামেরায় দেখা যায় একজন নেতার বক্তব্য চলার সময় বেলা সাড়ে ৫ টার দিকে হঠাৎ করেই শুরু হয় হট্টগোল। রিহ্যাব সদস্য ও কলাবাগান থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে বহিরাগত সদস্যরা অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে বোর্ডরুমে। তখন, হতভম্ব হয়ে প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করছেন অন্য পরিচালকরা।

রিহ্যাবের পরিচালক  জহির আহমেদ জানান, তাদের হট্টগোলে বাধা দিয়ে অন্য রিহ্যাব নেতারাও লাঞ্ছিত হন, গালিগালাজের শিকার হন। আরেক পরিচালক মহিউদ্দিন শিকদার বলেন, আমি যখন কামরুলকে থামাতে গেলাম সে আমাকেও পিস্তল দেখিয়ে হুমকি দেয়।

উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর যুবলীগ নেতা কামরুল অস্ত্র দেখিয়ে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেন সহ-সভাপতি সোহেল রানাকে। সোহেল রানার দাবি, রিহ্যাব নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় , তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন অপর সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগের তদন্তের অংশ হিসেবে ভাবমূর্তি রক্ষা কমটিরি ডাকা বিশেষ সভায়, অভিযুক্ত সহ সভাপতি সোহেল রানা, আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য রাখার সময় এ হামলা হয়। অন্যদিকে, অস্ত্র হাতে প্রবেশ করা যুবলীগ নেতা কামরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

পুরো সময় চেয়ারে অনেকটা নিরব বসে ছিলেন পরিচালনার দায়িতে থাকা আরেক সহ- সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া। অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনার জন্য তার দিকেই আঙ্গুল তুলছেন উপস্থিত পরিচালকদের কেউ কেউ।

রিহ্যাবের অন্যতম পরিচালক হাফিজ আল আসাদের কথা, সেদিন লিয়াকতের ডে ভূমিকা তাতে মনে হয়েছে উনি হামলাকারীদের নিয়ে এসেছেন।

পরিচালক মহিউদ্দিন শিকদারের কথা, সভা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন লিয়াকত, তার উচিত ছিল হামলাকারীদের গিয়ে থামানো। উনি নিজে তা করেননি। উল্টো আমরা যারা বাধা দিতে গেছি আমাদের বসতে বলেছেন, বলেছেন এর মধ্যে না যেতে।

আরেক পরিচালক নুরুল কুতুবুল আলম চান, তদন্ত করে যথাযথ ব্যভস্থা নেয়া হোক। তবে অভিযোগের বিষয়ে কিছু বলতে চাননি সহ সভাপতি লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি পরে কথা বলবো।

ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১০ জন পরিচালক চিঠি দিয়েছেন রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিনের কাছে। হামলার সময় দেশে না থাকলেও ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

সংগঠনের নিজস্ব তদন্ত ছাড়াও দু’পক্ষের পাল্টা-পাল্টি মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।

যমুনা অনলাইন: টিএফ

Exit mobile version