Site icon Jamuna Television

পিলখানা হত্যা : ১০ হাজার পৃষ্ঠার রায় পড়তে সময় লাগবে কয়েকদিন

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস ঘটনা উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেছেন, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও শান্তি বিনষ্টে, একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ বাহিনীকে ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। বিদ্রোহের মূল লক্ষ্য ছিল সেনাসদস্যদের হত্যা করে দাবি আদায়, সেনাবাহিনীর সাথে বিডিআরের বৈরিতা সৃষ্টি। আজ রোববার (২৬ নভেম্বর) দীর্ঘ ১ হাজার পৃষ্ঠার পর্যবেক্ষণে এসব কথা বলেছেন হাইকোর্ট। মূল রায়ের আকার ১০ হাজার পৃষ্ঠা। রায় প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, তিন বিচারপতিই সর্বসম্মত। ১০ হাজার পৃষ্ঠার এ রায় পড়তে কয়েক দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। কাল সাড়ে ১০টা থেকে আবার বসবেন হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।

রোববার বেলা ১১টার দিকে পিলখানা হত্যা মামলার ১৫২ জনের ডেথ রেফারেন্স ও যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ১৬১ জনের আপিল রায় পড়া শুরু করেন ৩ বিচারপতির বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ। ৬৯ জনকে খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলেরও রায় প্রদানের দিনও ধার্য ছিল।

প্রথমদিন পর্যবেক্ষণ পড়েন বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী। আদালত হত্যাকাণ্ডকে ইতিহাসের নৃশংস ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও শান্তি বিনষ্টে একটি শৃঙ্খলিতবাহিনীকে ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। যার, মূল লক্ষ্য ছিল সেনাসদস্যদের হত্যা করে দাবি আদায়। সেনাবাহিনীর সাথে বিডিআরের বৈরিতা সৃষ্টির চেষ্টা করা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট ও শান্তি মিশনে বাংলাদেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।

বিকাল চারটায় বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী তার নিজের পর্যবেক্ষণ পড়ে শেষ করেন। রায় প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, পর্যবেক্ষণ আলাদা হলেও বিচারপতিরা এমন ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন রায়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন যা অত্যন্ত ইতিবাচক।

আদালত বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন ইপিআর পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সীমান্তরক্ষায় নিয়োজিত এই বাহিনী দেশে-বিদেশে সম্মানের সঙ্গে কাজ করেছে। কিন্তু ২০০৯ সালে পিলখানায় তৎকালীন বিডিআরের কিছু সদস্য আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। এই কলঙ্কচিহ্ন তাঁদের অনেক দিন বয়ে বেড়াতে হবে।

আসামি সংখ্যার দিক থেকে পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ওই হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এই হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচার প্রক্রিয়ার আরেকটি বড় ধাপ সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।

যমুনা অনলাইন: টিএফ

 

Exit mobile version