Site icon Jamuna Television

রিমান্ডে নিয়ে বৃদ্ধের সর্বস্ব লিখে নেয়ার অভিযোগ, অতিরিক্ত ডিআইজির বিরুদ্ধে মামলা

এবার রিমান্ডে থাকা অবস্থায় অস্ত্রের মুখে ৭০ বছরের বৃদ্ধের বিপুল পরিমান জমি বাড়ি গাড়িসহ স্থাবর অস্থাবর সকল সম্পত্তি লিখে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সদর দপ্তরে কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি গাজি মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে। এঘটনায় তার স্ত্রী ফারজানা মোজাম্মেলসহ ২০ জনের নামে আদালতে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগি। অভিযোগ গুরুতর হিসেবে আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন মহানগর হাকিম দেবব্রোত বিশ্বাস।

রাজধানীর পুর্বাচলের পাশে পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে আধুনিক আবাসন প্রকল্প হলো আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটি। বিশাল এ হাউজিং সোসাইটির নামে বিপুল পরিমান জমি কেনা হয় স্থানীয় জাহের আলির মাধ্যমে। পরে পাওনা টাকা আদায়ের নামে রিমান্ডে থাকাবস্থায় অস্ত্রের মুখে জাহের আলির সহায় সম্বলসহ সর্বস্ব লিখে নেয়ার অভিযোগ করেছে তার পরিবার। থানা পুলিশ ফিরিয়ে দেয়ার পর আদালতে মামলা দায়ের করেন তারা।

মামলার সূত্রে জানা যায়, গেলো বছর ১০ জুলাই আলোচনার নাম করে রূপগঞ্জ থানার সাবেক ওসি মনিরুজ্জামান, জাহের আলী ও তার ছেলেকে পুলিশ সদর দপ্তরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চোখ বেঁধে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মিন্টো রোডে মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে। এর পর ২৪ জুলাই গ্রেফতার দেখানোর আগ পর্যন্ত নিখোঁজ ছিলেন তারা। এসময় জমি লিখে নেয়ার জন্য প্রতিদিন জাহের আলির ছেলে ও স্বজনদের উপর নির্যাতন চালিয়ে বসতভিটাসহ মোট সাড়ে ৬২ বিঘা জমি লিখে নেয়ার অভিযোগ করা হয়।

২৩ জুলাই শাহবাগ থানায় একটি প্রতারণা মামলা হয়। পরদিন তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। ২৫ জুলাই থেকে ৫ দিনের রিমান্ডে থাকাবস্থায় ২৬ জুলাই অস্ত্রের মুখে আরো কয়েকটি দলিল করে নেয়ার অভিযোগ করেন জাহের আলী ও তার স্বজনরা।

বাদিপক্ষের আইনজীবী জানান, রিমান্ডে থাকা আসামিদের কাছ থেকে এভাবে দলিল করে নেয়ার অভিযোগে উদ্বেগ জানিয়েছেন আদালত। পরে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারক।

এদিকে জাহের আলীর পরিবারের বিরুদ্ধে একে একে ১৪ টি মামলা হয়। চলতি বছর ১৪ মার্চ ভুক্তভোগীর ছেলের বউ আফরোজা আক্তার আঁখি বাদি হয়ে আদালতে অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হককে প্রধান করে একটি মামলা করেন। যেখানে অতিরিক্ত ডিআইজি’র স্ত্রী ফারজানা হক, রুপগঞ্জ থানার ওসি এবং অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়।

তবে সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেন আনন্দ পুলিশ হাউজিং এর প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক। ভুক্তভোগিদের সাথে আপোশরফার চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, পুলিশের উর্ধতন এ কর্মকর্তা, জাহের আলির বসত ভিটাসহ সমস্ত জমি স্ত্রী ও নিজের নামে লিখে নিলেও, প্রত্যেকটি সম্পত্তির সামনে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন আনন্দ পুলিশ হাউজিং এর নামে।

Exit mobile version