Site icon Jamuna Television

চট্টগ্রামে বেড়েছে নারী ছিনতাইকারীর উৎপাত

চট্টগ্রামে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সংঘবদ্ধ নারী ছিনতাইকারী চক্র। ছুরি কিংবা অস্ত্র ঠেকিয়ে আবার চলন্ত গাড়ি থেকে টান দিয়ে নারীর ব্যাগ, মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা কিংবা মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারা। গত ৩ মাসে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত ১০ নারী ছিনতাইকারীকে। এখনও নগরজুড়ে দাফিয়ে বেড়াচ্ছে আরও দু’ডজন নারী ছিনতাইকারী। যারা ছিনতাইয়ে ব্যবহার করছে পিস্তল ও ছুরিসহ নানা ধরনের অস্ত্র। পুলিশ বলছে, অনেক নারী ছিনতাইকারী অত্যন্ত ভয়ংকর। যারা অস্ত্র চালনায়ও বেশ পারদর্শী। এসব কারণে নগর পুলিশের নতুন করে মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে তারা। প্রতিটি থানায় ছিনতাইকারীর তালিকায় আছে নারী সদস্যদের নামও। নগরীতে সর্বশেষ শনিবার দিন দুপুরে নারী ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা মর্তুজা বেগম। শিকলবাহা ক্রসিং এলাকায় গেলে ওই নারীকে ছুরি ঠেকিয়ে চার নারী ছিনতাইকারী প্রায় দেড় ভরি অলঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। পরে মর্তুজা বেগম চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দু’নারী ছিনতাইকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। গ্রেফতারকৃতরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছির নগর থানার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কমলা বেগম (২৬) ও মালেহা বেগম (২৮)। এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী থানার ওসি আলমগীর মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, ‘নারী ছিনতাইকারীরা নতুন করে প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। গ্রেফতার দুই নারী সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তাদের দলে আর কত নারী ছিনতাইকারী আছে এবং তারা কোথায় কোথায় এসব অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে রিমান্ডে তা জানার চেষ্টা করা হবে।’

পুলিশের তালিকায় থাকা কয়েকজন নারী ছিনতাইকারী হল- মোছা. রাহেলা, আফিয়া বেগম, ফুলতারা বেগম, শাহার বানু, সুলতানা বেগম, নাজমা বেগম (৩৫), মরিয়ম বেগম (২৫), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর এলাকার রুবিনা (২৫), খাইরুন (২২), হাফিজা আক্তার (১৯), কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার পান্নাবাজার এলাকার আবুল কাশেমের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে কেয়া বেগম (২০), দেবীদ্বার বাকরাবাজ এলাকার আবদুস শুক্কুরের মেয়ে পিংকি আক্তার ওরফে স্বপ্না (১৮) ও চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকার শাহজাহানের মেয়ে শাহনাজ আক্তার (১৮)। চলন্ত বাস থেকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে ২৩ এপ্রিল নগরীর লালদীঘি পাড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় দুই নারী ছিনতাইকারীকে। এরা হল- ব্রাহ্মণবারিয়ার জেলার নাসিরনগর থানার মঈন উদ্দিন মিয়ার স্ত্রী রুবিনা (২৮) ও একই এলাকার মুশাহিদের স্ত্রী জান্নাত আক্তার (২০)। মরিয়ম জাহান মুন্নী নামে এক নারী সাংবাদিকের গলার চেইন ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় দুই নারী সদস্যকে গ্রেফতার করে টহল পুলিশ। মে মাসে মার্কেটে ক্রেতা সেজে ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় দুই নারী ছিনতাইকারীকে। এরা হল- হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার মকবুল হোসেনের মেয়ে স্বপ্না ও কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আবদুল গফুরের মেয়ে ফাতেমা বেগম। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

নগরীর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘নারী ছিনতাইকারীরা ৪ থেকে ৫ জনের গ্রুপ ভিত্তিক থেকে অপকর্ম করে থাকে। তারা বিশেষ করে ঈদ, পূজা, রথযাত্রা, মেলা কিংবা স্টেশনকেন্দ্রিক বেশি থাকে। তারা রাতে একা কোনো ব্যক্তিকে পেলে গায়ে পড়ে ঝগড়া করে। পরে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে কৌশলে টাকা-পয়সা ও মালামাল নিয়ে যায়।’
সূত্র: যুগান্তর

Exit mobile version