Site icon Jamuna Television

বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় আরও সাতটি স্থান

১৯৭৮ সাল থেকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা তৈরি শুরু করে জাতিসংঘের বিজ্ঞান, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা- ইউনেস্কো। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ভোটে প্রতি বছরই তালিকাভুক্ত হয় প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বিশেষ মর্যাদার পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহি স্থানগুলো সুরক্ষাই তালিকার উদ্দেশ্য । আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির চলতি অধিবেশনে এই তালিকায় যোগ হয়েছে বেশ কয়েকটি নতুন স্থান।

প্রায় ৪ হাজার বছর আগে মেসোপটেমীয় সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র ছিল ব্যাবিলন। ইরাকের রাজধানী বাগদাদের ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ফোরাত নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল এই প্রাচীন নগরী।

এখানেই ছিলো সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম ঝুলন্ত উদ্যান। আশতার ফটক, বাবেল টাওয়ার। প্রায় তিন দশকের প্রচেষ্টায় অবশেষে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পেলো এ শহরটি।

ব্যাবিলন ট্যুর গাইড মাকি মোহাম্মেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় ছিলাম এই দিনটির। শেষ পর্যন্ত প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনটি বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পেলো। প্রাচীন যুগের আইন, জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চ্চা সবকিছুরই কেন্দ্র ছিল এ শহর।

বিশ্ব ঐতিহ্যের নতুন তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ভারতের রাজস্থানের পিংক সিটি হিসেবে খ্যাত জয়পুর। অবকাঠামোগত সৌন্দর্য্যের জন্য বিখ্যাত এ শহর, যেখানে পাওয়া যায় মধ্যযুগের শেষ দিকের নির্মাণশৈলী।

নতুন তালিকায় আরো আছে আইসল্যান্ডের ভাটনাজোকুল ন্যাশনাল পার্ক। মূল ভূখন্ডের ১৪ শতাংশ এলাকা জুড়ে থাকা এই পার্কে একইসাথে রয়েছে বিশাল হিমবাহ ও লাভা ক্ষেত্র। আছে দুর্লভ প্রাণীকূল।

চীনের লিয়াংঝু শহরের ধ্বংসাবশেষও যুক্ত হয়েছে, নতুন তালিকায়। ইয়াংঝি নদীর তীরে প্রায় ৫ হাজার বছর আগে গড়ে ওঠা কৃষিভিত্তিক সভ্যতার সাক্ষী এ স্থান।

প্রত্নতত্ত্ববিদ লিউ বিন বলেন, নদী ও পাহাড় ঘেষা অঞ্চলটিতে যেভাবে বসতি গড়ে তুলেছিলেন আমাদের পূর্বসূরিরা তা সত্যিই অবাক করার মত। প্রতিটি বাড়ির দু’পাশে ছিল পানির উৎস, চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হতো নৌকা।

ইউনেস্কোর নতুন তালিকায় আরও স্থান পেয়েছে এন্টার্কটিকা ঘেঁষা ফরাসী দ্বীপপুঞ্জ ও সাগর ফ্রান্সের, জাপানের ওসাকার প্রাচীন ৪৯টি গম্বুজ, যা তৈরি হয়েছিল ৩য় থেকে ৬ষ্ঠ শতকের মধ্যে, পাহাড় ও সমুদ্র ঘেরা ব্রাজিলের পর্যটন শহর পারাটি, বুরকিনা ফাসোর লোহার খনি।

মিয়ানমারে পর্যটদের অন্যতম আকর্ষণ বৌদ্ধ মন্দিরের শহর বাগান স্থান পেয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায়। ১১ থেকে ১৩ শতকের মধ্যে গড়ে ওঠা সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি বৌদ্ধ মন্দির রয়েছে এখানে।

এখন পর্যন্ত ১৬৭টি দেশের ১ হাজার ১০৭টি জায়গা স্থান পেয়েছে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায়। এর মধ্যে সর্বাধিক ৫৫টি স্থান চীনের। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইতালি। প্রতিবেশী ভারত রয়েছে ৬ষ্ঠ স্থানে। বাংলাদেশের সুন্দরবন, বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ ও পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার রয়েছে ইউনেস্কোর এই তালিকায়।

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির চলতি সভা শুরু হয় ৩০ জুন, চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত। এবারের অধিবেশনে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্যগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে।

Exit mobile version