Site icon Jamuna Television

এরশাদ-বিদিশার অসমাপ্ত প্রেম!

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী ছিলেন বিদিশা সিদ্দিক। তাদের দুইজনের প্রেম কাহিনী দেশব্যাপী আলোচিত ছিলো। খুব বেশিদিন দুইজন সংসার না করলেও তাদের মধ্যে ভালোবাসার কোন কমতি ছিলো না।

গত ২৮ জুন বিদিশা তার ফেসবুক পেইজ ‘বিদিশা এরশাদ’এ ‘আমাদের অসমাপ্ত প্রেম’ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দেন।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ৪০ বছরের বেশি ব্যবধান আমাদের দুজনের বয়সের কিন্তু একদিন ও উনি আমাকে তা বুঝতে দেননি সেই পার্থক্যটা। আমাদের বিয়ের আগে আমরা এঙ্গেজড হই লন্ডনে। উনি নিজেই একটা হীরের আংটি কিনে আনেন লন্ডনের এক দোকানে গিয়ে। সেই দিন উনি আমার কাছে থেকে কথা নেন মৃত্যু ছাড়া যেন আমরা আলাদা না হই। আজও আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

স্ট্যাটাসে তিনি আরো লিখেন, আমার নিজের ফ্ল্যাটে তখন আমরা বেশ কিছুদিন লন্ডন ছিলাম। বিএনপি ক্ষমতায় তখন, আমরা দেশ ছাড়া। উনি খুশী হননি এত ছোট হীরে আংটি কিনে। আর আমি তো উনার ব্যবহার দেখে খুশী তে আত্মহারা। ঠিক পরের বছরই উনি বিয়ের দিন নিজের হাতের দুই ক্যারেট আংটিটি খুলে আমাকে পরিয়ে দিয়ে বললেন, উনার বন্ধু সৌদী বাদশা দেওয়া আমার এই আংটিটি আজ আমি আমার রানীকে দিলাম। খুব অল্প কয়টা বছর আমাদের প্রেম, সংসার হয়েছিল । এত ভালোবাসতে পারে কেউ? বিএনপি ঝড়ে লন্ড ভন্ড হয়ে গেলাম আমরা।

স্ট্যাটাসে আরো বলা হয়, কোনো দোকানে আমি শ্যাম্পুর বোতল খুলে গন্ধ বা সাবান ঘ্রাণ নিলে উনি পরের দিন কিনে নিয়ে আসতেন ওগুলো। আমি বিস্মিত হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে থাকলে বলতেন তোমার চুলে আমি গন্ধটা পেতে চাই। এমন কত যে অসংখ্য স্মৃতি আছে আমাদের লিখে শেষ করা যাবে না তা।

বিদিশা লিখেন, গতকাল থেকে উনার বেশ জ্বর। হসপিটাল আইসিইউতে শুয়ে আছেন। রুগ্ন, ক্লান্ত শরীর। বয়সের ভারে ক্লান্ত। আর চলতে চায় না জীবন। অন্য সবাই মেনে নিয়েছে বয়সের কাছে হার মানা এরশাদকে। ফিসফিস করে সবাই কবরের কথা ও বলছে কানে আসছে আমার। কিন্ত আমি ও এরিক তো হার মানতে দিবো না তোমায় । আমরা তো রাজনীতি প্যাঁচ বুঝি না। এরিক জায়নামাজে আছে পড়ে কয়টা দিন। তুমি ছাড়া ও একা ভাত খেতে চায় না। শুধু তুমি ভালোভাবে ফিরে এসো। আমরা তোমাকে এই অবস্থা চাই। তুমি যে অবস্থায় আছো তেমনি চাই।

বিদিশা বলেন, আমরা ৩ জন শুধু। তুমি, আমি ও আমদের এরিক। আর কেউ না ।হসপিটাল থেকে ফিরে এসে বাড়িতে তুমি রেস্ট নিবে। এরিক গান শুনবে তোমাকে আমি পিয়ানো বাজাবো বা তোমার প্রিয় ফিস ফ্রাই রান্না করবো। সন্ধ্যায় আড্ডা দিবো। মা, বাবা ও ছেলে লুডি খেলবো। বা আমি নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে বাপছেলেকে কাবাব খাওয়াতে নিয়ে যাবো খেলার বাজীতে হেরে গেলে। আজো কিন্তু আমি অপেক্ষায় থাকলাম নীল শাড়িটি ভাজ খুলবো আশায়।

Exit mobile version