Site icon Jamuna Television

৫০০ মশা মারলে ১০০ টাকা!

১৯৯৩ সালে রংপুরে মশার প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়। তখন পৌর মেয়র (পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশন) ছিলেন সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু। মশা নিধনে তিনি এক অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করেন। তিনি ঘোষণা দেন, ৫০০ মশা জমা দিলে ১০০ টাকা দেয়া হবে। তার এই ঘোষণা সারাদেশে আলোড়ন তুলেছিলো। কাজেও দিয়েছিলো এই ঘোষণা। মাত্র ১৫ দিনে মশার প্রকোপ অনেক কমে গিয়েছিলো।

সেই সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র ছিলেন। সম্প্রতি মশা নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই আলোচনা তুঙ্গে। এডিস মশার আক্রমণে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে মানুষ। হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীতে ভরপুর। কোনোভাবেই মশার প্রকোপ কমছে না। মশার উপদ্রব কমাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে দুই সিটি কর্পোরেশন। শেষ পর্যন্ত আদালত থেকেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি মশার এমন প্রকোপে ঝন্টু মডেলকেই পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিলেন তার ছেলে রিয়াজ হিমন। গতকাল বিকালে তিনি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন-

‘৯৩ সালে রংপুর এ একবার মশার প্রকোপ অনেক বেড়ে গেল। তখন আব্বা মাত্র সিটি (তখন পৌরসভা) মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। আব্বা তখন উদ্ভট এক ঘোষণা দিলেন “৫০০ মশা ১০০ টাকা!” হ্যাঁ আপনাদের মতোই সবাই অবাক হয়েছিল! বাট ইট ওয়াজ হিউজ এফেক্টিভ! পাড়ায় মহল্লায় মশা মাড়ার ধুম পরে যায়। সবাই গামলায়, বালতিতে যে যেটাতে পারে তেল মেখে ড্রেন, খাল, ডোবা যেখানে মশা বেশি সেখানে একটান দিত একবারে হাজার হাজার মশা গামলায় ধরা পড়ত! ১৫ দিনে সত্যি সত্যি মশার প্রকোপ উধাও হয়ে গিয়েছিল!

বিবিসি থেকে আমাদের বাসায় প্রতিনিধি আসলো আব্বার ইন্টারভিউ নিতে যে এই উদ্ভট ঘোষণার কারণ কি?

আব্বা বলেছিলেন, দেখুন জেলখানা থেকে নির্বাচন করার পরেও মানুষ আমাকে সবগুলো সেন্টারে প্রথম করেছে! আমার কাছে তাদের প্রত্যাশা আকাশচুম্বি! এই সরকার আমাকে এক টাকাও দেয়না! ট্যাক্স আর ট্রেড এর টাকা দিয়ে আমি বেতন দেই। আমার কাছে যে টাকা আর ম্যানপাওয়ার আছে তা দিয়ে ১৫টা ওয়ার্ড কেন ১টা ওয়ার্ডের মশাও মারা সম্ভব না! আর যাকে দিয়ে ওষুধ কেনাব সেই বেশীরভাগ মেরে দেয়! তাই সবাইকে যতক্ষণ না আমি উদ্বুদ্ধ করতে পারব মশা মারা সম্ভাব না! আমি হিসাব করে দেখেছি রংপুর পৌরসভায় ১০০ টার মত ক্লাব আছে ওদের ব্যাট বল প্রয়োজন আর যারা মশা মেরে মেরে আনছে তার বেশিরভাগই ছোট ছোট ক্লাব এর ছেলেরা আমি ওদের টাকার পরিবর্তে ব্যাট বল দিচ্ছি ওরা তাতেই খুশি। আর রংপুর পরিস্কার রাখার দায়িত্ব তো আমাদের সবার!

Exit mobile version