Site icon Jamuna Television

রাজধানীর প্রবেশ পথগুলোয় সক্রিয় ছিনতাইকারী চক্র

পলাশ প্রধান, গাজীপুর

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর প্রবেশ পথগুলোতে সক্রিয় হতে শুরু করেছে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা। র‌্যাব ও পুলিশ ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গ্রেফতার হয়েছে কয়েকজন পেশাদার ছিনতাইকারী।

গত ঈদের আগে ৩০ মে ২০১৯ তারিখে বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে টঙ্গী ব্রিজের নিচে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-১) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই ছিনতাইকারী নিহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, সাতটি মোবাইল, দুটি সুইচ গিয়ার, ছয়টি গ্যাস লাইট ও কিছু গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে একজন ব্লেড বাবু ও অপরজন নান্নু ওরফে ট্যাংরা নান্নু নামে পরিচিত। তারা টঙ্গীবাজার ও আবদুল্লাহপুর এলাকার ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে জানায় র‌্যাব। এ ঘটনার পর কিছুদিন ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বন্ধ থাকলেও ফের সক্রিয় হয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা।

রাজধানীর প্রবেশ পথগুলোতে ট্রাফিক সিগন্যাল দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছিনতাইকারীরা তাদের কার্যক্রম চালায়। পাশাপাশি টানা পার্টির দৌরাত্ম্যতো থাকছেই। এক একটি প্রবেশ পথে ২০/৩০ জনের একটি সিন্ডিকেট মাসের পর মাস ধরে ছিনতাই চালিয়ে আসলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মাঝে মধ্যে ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে দুই/একজন ছিনতাইকারী আটক হলে পুলিশ তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। কিন্তু ভুক্তভোগী কেউ এ ঘটনায় মামলা করেন না বলে পুলিশেরও করার কিছুই থাকে না।

রাজধানীর প্রবেশ পথগুলোর মধ্যে রয়েছে টঙ্গী-আবদুল্লাহ্পুর, আশুলিয়া-তুরাগ, সাভার-মিরপুর-১০, নারায়ণগঞ্জ-সায়দাবাদ, গুলিস্তান গোলাপশাহ মাজারের সিগন্যালসহ রাজধানীর আরও ১০/১২টি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে রয়েছে ছিনতাইকারীদের কার্যক্রম। সকাল ৮টা থেকে ১০টা, বিকাল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত শিফট ভিত্তিক এসব স্থানে ছিনতাইকারী চক্রগুলো সক্রিয় থাকে। ট্রাফিক সিগন্যালে যানজটের মধ্যে থেমে থাকা বাস যাত্রীদের ওপর এই চক্র সবচেয়ে বেশি টার্গেট করে। বাসের জানালা খোলা রাখা অবস্থায় কোনো যাত্রী মোবাইল ফোনে কথা বললে বা হাতে নিয়ে ইন্টারনেট দেখলে ছিনতাইকারী হাত ঢুকিয়ে ছোঁ মেরে মোবাইল ফোনটি নিয়ে মুহূর্তে ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে যায়। মোবাইল ছাড়াও মেয়েদের পার্স, গলার গহনা ছিনতাইয়ের ঘটনা অহরহ ঘটছে। এসব চক্রের প্রধান টার্গেট নারীরা। আবার অনেক সময় ভুক্তভোগী ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে ধরে ফেললে গণধোলাই দেয়ার নাম করে তার চক্রের সদস্যরাই তাকে সরিয়ে দেয়।

টঙ্গীর বাজারের মো. রবিন উদ্দিন জানান, গত মাসের ২৬ তারিখ সন্ধ্যায় টঙ্গীবাজার থেকে উত্তরায় যাচ্ছিলাম। রাজধানীর আবদুল্লাহপুর পার হওয়ার সময় হঠাৎ আমার মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যায় তিনজন ছিনতাইকারী। অনেক দৌড়াদৌড়ি করেও তাকে আর ধরতে পারিনি। পরে, টঙ্গী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। তবে আমার মোবাইল ফোনটি আর পাওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-১) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ঈদ এলেই ছিনতাইকারী, মলম/অজ্ঞান পার্টি ও ডাকাতির তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। এর আগে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। বিশেষ করে টঙ্গী, আবদুল্লাহপুর, চৌরাস্তা, বেড়িবাঁধ, আশুলিয়া ও আশপাশের এলাকায় অভিনব কৌশলে ছিনতাইয়ের অভিযোগ আসছে। ইতোমধ্যে ছিনতাইকারী একাধিক সংঘবদ্ধ চক্রকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব-১। দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

Exit mobile version