Site icon Jamuna Television

এডিস মশার উৎপত্তিস্থলের ম্যাপ বানাচ্ছেন যে গবেষক

তোয়াহা ফারুক:

গতকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি ম্যাপ। এডিস মশার সম্ভাব্য উৎপত্তিস্থল নির্দেশ করছে এই ম্যাপটি। দেশজুড়ে ডেঙ্গু আতঙ্কের মাঝে আলোচনা মূলত মশা মারার ওষুধ ছেটানো নিয়েই। আর তখনই ধরা পড়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছে কোনো ডাটাবেজ না থাকা ও তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতির ঘাটতির বিষয়টি। ডেঙ্গু আক্রান্তদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে সমন্বিত কোনো ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগও দৃশ্যমান না। ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও গণমাধ্যমের তথ্যেও ফারাক চোখে পড়ছে। এই সময়ে এডিস মশা প্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে ম্যাপ তৈরির এমন উদ্যোগ সচেতন মহলের নজর কেড়েছে।

ডেঙ্গু আক্রান্তদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত করে ম্যাপ তৈরির এই  উদ্যোগটি নিয়েছেন ফ্রিল্যান্স গবেষক আতিক আহসান। যুক্তরাজ্যের ব্রুনেল ইউনিভার্সিটি থেকে মেডিকেল এনথ্রোপলজি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া আতিক আহসান কাজ করেছেন বিভিন্ন দেশি ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে। যমুনা নিউজকে জানান, চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে কোনো ধরনের কার্যকর ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ চোখে পড়েনি তার, এই হতাশা থেকে নিজেই স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে এই ম্যাপটি তৈরি করছেন।

গবেষক আতিক আহসানের মতে, ডেঙ্গুর প্রকোপ কোথায় কম বা কোথায় বেশি সেটি জানা গেলে কোথায় বেশি ওষুধ ছিটাতে হবে, কোন এলাকার হাসপাতালে বেশি সিট দরকার হবে তার একটা সমন্বিত পরিকল্পনা করা সহজ হবে।

এরই মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে তার সাথে যোগাযোগ করে একসাথে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু তথ্য কীভাবে সংগ্রহ করা হবে সেটি চূড়ান্ত করা যায়নি। দেরি না করে নিজেই তথ্য সংগ্রহ ও মূল্যায়নের কাজ শুরু করেছেন এই গবেষক। পুরো কাজটা একাই করতে হচ্ছে বলে আপাতত শুধু আক্রান্ত রোগীদের ঠিকানা ধরে এডিস মশাপ্রবণ এলাকাগুলো শনাক্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

ডেঙ্গু রোগীর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব বা পরিচিতজনরা মাত্র ২/৩ মিনিটেই গুগল ডকস-এ  (এই লিংকে ক্লিক করে পূরণ করতে পারেন) সঠিক তথ্য দিয়ে এই ডাটাবেজ তৈরির কাজে সহযোগিতা করতে পারবেন। ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করা গণমাধ্যমকর্মীরাও সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে পাশে দাঁড়াতে পারেন আতিক আহসানের এই উদ্যোগের।

আতিক আহসান বলেন, উন্নত বিশ্বে এ ধরনের রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা হিসেবে ‘ডাইনামিক ডাটাবেজ’ থাকে যেটা আমাদের এখানে নেই। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ডাটাবেজ থাকতে হবে এবং এটা প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করতে হবে। এজন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগানো যেতে পারে।

এরইমধ্যে, ডেঙ্গু জ্বরে প্রাণ হারিয়েছেন বিভিন্ন বয়সেরও শ্রেণি পেশার মানুষ। সারাদেশের মানুষ আতঙ্কে ভুগছে। এমন পরিস্থিতিতে আতিক আহসানদের মতো উদ্যোগী মানুষরাই দেখাচ্ছেন আশার আলো।

Exit mobile version