Site icon Jamuna Television

সোফিয়ার চোখে আমার সর্বনাশ!

সোফিয়াকে দেখে মুগ্ধ হয়েছি। অড্রে হেপবার্নের আদল। মনে পড়ে যায়, রোমান হলিডে’র কথা। অমন সুন্দরী তরুণীকে দেখে আপ্লুত হওয়া দোষের কিছু নয়। এক চিমটি রোমান্টিসিজম আর এক চিমটি চাটুকারিতা মিশিয়ে দু’লাইন কবিতাও হয়ে যেতে পারে।

তবে, লেখার শিরোনাম কিন্তু সোফিয়ার সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে রোমান্টিসিজমের ফল নয়। এখানে, সর্বনাশ মানে সত্যিই সর্বনাশ। ‘পেটে লাথি মারা’ টাইপ সর্বনাশ!

সহকর্মীদের সাথে হাসতে হাসতেই বলছিলাম, কোনো একদিন হয়তো পাশে সহ-উপস্থাপিকা হিসেবে কোনো রোবট তরুণী বসবে। একটু পরেই মনে হলো রোবট উপস্থাপিকা পাওয়া গেলে তো উপস্থাপকও পাওয়া যাবে। রোবট তখন রিপোর্টার, ক্যামেরাপার্সনও হবে। তাহলে আমার কী হবে! আমাদের কী হবে! রোবটরা তো দেরি করবে না, ভুল করবে না, আলসেমি করবে না। ওদের চাকরি যাবে না। ব্যাটারা রিটায়ারও করবে না কোনোকালে।

ড্রাইভার থেকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট; রোবটরা এসবও হবে নিশ্চয়। আমরা স্বপ্ন দেখি বড় হয়ে, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা পাইলট হবো। রোবটদের সেসব স্বপ্ন দেখার বালাই নেই। তারা মায়ের পেট থেকে (ল্যাব আরকি) প্রফেশনালস্ হয়েই বেরুবে।

সোফিয়া অবশ্য হাসিমুখে বলেছে, মানুষকে সাহায্য করাই তার ব্রত। তবু, করুণ মুখে প্রশ্নটা করে রাখি, সোফিয়া, তোমার জাত ভাইয়েরা আমার চাকরি খাবে না তো?

তবে, একচিলতে আশার আলো দেখি তিনটে শব্দকে ঘিরে। এক, ভুল; দুই, স্বপ্ন; তিন, অভিযোজন। ভুল থেকে যে সৌন্দর্য দেখা দেয়, সে তো আর যন্ত্রমানবের কাছে ধরা দেবে না। বাস্তবতা ছাপিয়ে অসম্ভব কিছু করে ফেলার স্বপ্নও নিশ্চয়ই ওরা দেখবে না। ওরা সমীকরণ মিলিয়ে যা করা সম্ভব, কেবল ততোটুকুই করবে। আর এই রোবটগুলো কোনদিন কল্পনাও করতে পারবে না, মানুষের অভিযোজন ক্ষমতা কী ভয়াবহ রকমের। শত্রুর সাথে গলাগলি, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা- এ শুধু মানুষের । আমাদের সব সয়ে যায়।

সৌমিত্র শুভ্র : সাংবাদিক

 

Exit mobile version