Site icon Jamuna Television

জনপ্রতিনিধিদের কাছে উপেক্ষিত মমেনা বেওয়া, জোটেনি বিধবা ভাতা ও মাথা গোঁজার ঠাঁই

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :

অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের নন্দিরকুটি গ্রামের মৃত: কপুর উদ্দিনের স্ত্রী মমেনা বেওয়া’র (৬৫)। স্বামী মারা গেছে ৩০ বছর পূর্বে।

দু’সন্তানের মধ্যে মেয়েকে অনেক কষ্টে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে মমিনুল বিয়ে করার পর স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা সংসার পেতেছে। এখন এই বৃদ্ধ মা কি খেল বা না খেল তা দেখার সময় নেই তাদের। গায়ে গতরে খেটে সন্তানদের বড় করলেও এখন সেই সন্তানরাও ঠিকমতো খোঁজখবর রাখেন না। ফলে এক প্রকার না খেয়ে কাটছে তার দুর্বিষহ দিন। এই বিপদে এগিয়ে আসেনি জনপ্রতিনিধিরাও। এখন পর্যন্ত তার ভাগ্যে জোটেনি বিধবা ভাতা, ভিজিডি কার্ড বা মাথা গোঁজার মত একটু ছাদ।

সোমবার সংবাদকর্মীরা এই বিধবা নারীর কাছে গিয়ে জানতে পারেন তার কষ্টকর দিনযাপনের চিত্র। ছেলে মমিনুলের ঘরটি তখন তালাবদ্ধ। পলিথিন দিয়ে ছোট্ট একটি ঝুপড়ী ঘরে উদাস মনে চেয়ে আছেন তিনি। এত লোককে দেখে তিনি এগিয়ে আসেন উৎসাহ নিয়ে। তারপর সংবাদ কর্মী শুনে বলেন, ‘‘মোর খোঁজ-খবর নিয়া কী হইবে বাবা! পায়ের রক্ত মুখোত তুলি কষ্ট করি বেটিক বিয়া দিছং। বেটা বউ নিয়া আলাদা খায়। বয়সকালে কাম-কাজ করি ছওয়া মানুষ করছং। নিজের প্যাটও চালাইছং। এ্যালা মোর কাঁইয়ো খোঁজ-খবর নেয় না। মরণের মেম্বর-চেয়ারম্যানরাও কিছু দেয় না।’’

তার সাথে কথা বলে জানা গেল এখনো তিনি বিধবা ভাতা বা কোন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় পড়েননি। ঘর না থাকলেও পাননি সরকারি ঘরের বরাদ্দ।

প্রতিবেশী শহিদুল, নুরজাহান বেগম ও এরশাদুল হক জানান, বৃষ্টি-বাদলের দিন খুব কষ্ট হয় এই বিধবা মহিলার। মমেনা বেওয়া অতি দরিদ্র হলেও তার ভাগ্যে জোটেনি বিধবা ভাতা ও একটা সরকারি ঘর। কিন্তু এতো দিনেও তার ভাগ্যে কিছুই জোটেনি।

এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ মাছুমা আরেফিন জানান, নতুন ঘরের বরাদ্দ আসলে তাকে ঘর দেওয়া হবে এবং সেই সাথে তিনি বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করলে যাচাই বাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Exit mobile version