রিমন রহমান:
দরিদ্র্য ও হতদরিদ্র্য মানুষদের সহায়তা দিতে চালু আছে শতাধিক কর্মসূচি। মাসিক ভিত্তিতে দেয়া হয় নগদ অর্থ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে কিছুটা বেড়েছে সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির ভাতার পরিমাণ। এক্ষেত্রে ৫টি কর্মসূচিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে।
এক্ষেত্রে বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, মা ও শিশু এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মাসিক ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রশ্ন হচ্ছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে এত কম অর্থ বৃদ্ধিতে সুফল মিলবে কি? এছাড়া, সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে সঠিক ব্যক্তি শনাক্তেও হয় নয়-ছয়।
অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেছেন, বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাজারে ৫শ’, ৭শ’, ১ হাজার টাকা দিয়ে তো একটি দরিদ্র, হত দরিদ্র পরিবার এক সপ্তাহও চলতে পারবে না; এক মাস তো দূরের কথা। এমন পরিমাণে অর্থ দেয়া উচিত, যাতে এটা সেই পরিবারের অবস্থান পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে।
শুধু ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধিই নয়। জীবনমান উন্নত করতে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। কিন্তু সঠিক মানুষকে শনাক্ত করা দরকার।
ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, হত দরিদ্র ব্যক্তিদের কাছে পাওয়ার কথা, তারা (শনাক্তকারী) কিন্তু পায় না সহজেই। এটা কিন্তু মিস টার্গেটিং, যেটাকে আমরা একটা বড় সমস্যা বলি। যখন এতগুলো কর্মসূচি থাকে, তখন এতগুলো কর্মসূচির টার্গেটিংটা সঠিকভাবে সঠিক ব্যক্তি বা পরিবারের কাছে পৌঁছানো কিন্তু একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
শুধু আর্থিক সহায়তাই নয়, ভর্তুকি দামে খাদ্য পণ্য দেয়ার সময়ও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বছরের ৫ মাসের স্থলে ৬ মাস ধরে দেয়া হবে ভর্তুকি দামে চাল। বাড়বে সহায়তা কর্মসূচির পরিমাণও। কিন্তু এই ধরনের কর্মসূচি টেকশই কোনও পন্থা নয়।
অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বললেন, যে সমস্ত কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে, যাদের প্রয়োজন সহায়তা, সেগুলো নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা কী বলে? কোভিড-১৯ পরবর্তী অভিজ্ঞা বলে যে, ক্যাশভিত্তিক কর্মসূচিটাই সবচেয়ে বেশি কার্যকর। দুর্নীতি, অপচয় কমিয়ে সরাসরি টার্গেট গ্রুপের কাছে পৌঁছান।
উল্লেখ্য, পেনশন কর্মসূচি বাদ দিলে সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচিতে নতুন অর্থবছরে জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা।
/এমএন
Leave a reply