ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বকাপ ফুটবল দরজায় কড়া নাড়ছে। এমন সময় কাতারের রাজধানী দোহার অ্যাপার্টমেন্টগুলো থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে হাজারেরও বেশি বিদেশি শ্রমিকদের। বিশ্বকাপের সময় দেশটিতে আসা ফুটবল ভক্তরা অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে থাকবেন বলে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে বলে বিশেষ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
প্রতিবেদনটিতে জানা গেছে, দোহা কর্তৃপক্ষ এক ডজনেরও বেশি ভবন খালি করে দিয়েছে। আর সেই ভবনগুলোর বাসিন্দা ছিলেন প্রধানত এশিয়া ও আফ্রিকান শ্রমিকরা। এখন বিছানা ও আসবাবসহ বাড়ির বাইরে ফুটপাতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। নতুন বাসস্থান খুঁজে বের করার সময়ও তাদের দেয়া হয়নি বলে রয়টার্সের কাছে জানিয়েছেন এই শ্রমিকরা।
বিশ্বকাপ শুরুর চার সপ্তাহেরও কম সময় আগে দোহায় শুরু হলো এই উচ্ছেদ অভিযান। এর আগে, বিদেশি কর্মীদের প্রতি কাতারের বৈষম্যমূলক আচরণ এবং দেশটির বিধিনিষেধমূলক সামাজিক আইনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক তদন্তের তাগাদা দিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।

দোহার আল মানসুরা এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছে, সেখানকার একটি ভবনে প্রায় ১২০০ মানুষের বাস। গত বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয়, বাড়ি ছাড়ার জন্য তাদের হাতে সময় আছে মাত্র ২ ঘণ্টা। এরপর পৌর কর্মকর্তারা রাত সাড়ে দশটার দিকে ফিরে আসে। সবাইকে জোর করে বের করে দেয় এবং ভবনের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। অনেকে তাদের জিনিসপত্র সংগ্রহ করার জন্য সময়মতো ফিরে আসতে পারেনি।
এই এলাকায় ১৪ বছর ধরে থাকেন মোহাম্মাদ। বাঙালি এই গাড়িচালক জানান, যে বাড়িতে তিনি এতগুলো দিন ধরে থেকে আসছেন সেই বাসস্থান ছেড়ে দেয়ার জন্য মাত্র ৪৮ ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে তাকে। ক্ষুব্ধ মোহাম্মাদ বলেন, এই স্টেডিয়ামগুলো কে বানিয়েছে? এই রাস্তাঘাট কে বানিয়েছে? সবকিছু কারা বানিয়েছে? বাঙালি, পাকিস্তানি, আফ্রিকান- আমাদের মতো মানুষেরাই এসব বানিয়েছে। এখন কাজ শেষ। তাই রাস্তায় নামিয়ে দেয়া হচ্ছে আমাদের।
তবে কাতারের একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এসব উচ্ছেদ অভিযান বিশ্বকাপের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। বরং, দোহা শহরকে পুনর্গঠনের জন্য গৃহীত বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই অভিযান শুরু করা হয়েছে। তিনি বলেন, সকলের জন্য নিরাপদ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারটি ফিফাকে জানিয়েও কোনো মন্তব্য পায়নি বলে উল্লেখ করেছে রয়টার্স। সেই সাথে জানিয়েছে, কাতার বিশ্বকাপ আয়োজকরা এ ব্যাপারে সরকারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
/এম ই
Leave a reply