
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের তিন ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার খবরে বিশ্বজুড়ে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। ব্যাপক দরপতন হয়েছে বড় বড় ব্যাংকগুলোর শেয়ারে। আশঙ্কায় ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেকে। যদিও মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলছে, আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই। নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সমাধান করা হবে সংকটের। খবর বিবিসির।
ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারায় সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের সামনে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড়। অনেকেই তুলে নিতে চান আমানত। গচ্ছিত সব অর্থ ফেরত পাবেন কি না তা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সবাই।
তবে, পরপর তিন তিনটি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পরও মার্কিন প্রশাসনের দাবি, নিরাপদেই আছে দেশের আর্থিক ব্যবস্থা। স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট আশ্বস্ত করেছেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যাংকগুলোয় গ্রাহকদের আমানত সুরক্ষিত আছে। আস্থা ফেরাতে জরুরি ঋণের ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। করদাতাদের ঘাড়ে কোনো নতুন চাপ আসবে না বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিরাপদ। আপনাদের আমানত চাওয়া মাত্র পাবেন। এসব ব্যাংকে যারা অর্থ গচ্ছিত রেখেছিলেন, তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন। গত সপ্তাহে যখন খবর পাই, তখনই জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এফডিআইসি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ব্যাংকগুলোর।
তবে মার্কিন প্রশাসনের আশ্বাসেও পুরোপুরি ভরসা করতে পারছেন না গ্রাহকরা। ২০০৮ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের পর বিশ্বজুড়েই ছড়িয়েছে ভীতি। যার প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারে। এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা সব প্রান্তেই স্টক মার্কেটে দরপতনের খবর। সোমবার (১৪ মার্চ) জার্মানির কোমার্জ ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য কমেছে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। ১০ শতাংশের বেশি দরপতন হয়েছে স্পেনের সান্তানদের ব্যাংকে। টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের দরপতন হয়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ পর্যন্ত। যা গত তিন বছরে সর্বোচ্চ।
এদিকে, ইউরোপের চেয়েও ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্রের ছোট ব্যাংকগুলো। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় আরও নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশিষ্ট অর্থনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক সুয়ারে ওমারোভা এ প্রসঙ্গে বলেন, বাজারে বিভিন্ন পক্ষের প্রভাব পড়ে আর্থিক ব্যবস্থাপনা খাতেও। গ্রাহক বা শেয়ারহোল্ডারদের ভীতি তৈরি হওয়া মোটেও অমূলক কিছু নয়। সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের পতনই প্রমাণ করে যে, এ খাতে আরও পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ দরকার। বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিতে হবে।গ
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে সিলভারগেট ব্যাংক বন্ধের মধ্য দিয়ে শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং খাতের বিপর্যয়। গত শুক্রবার দেউলিয়া ঘোষিত হয় অন্যতম বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক। দুদিনের ব্যবধানে বন্ধ হয়ে যায় ১১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূলধন নিয়ে তৈরি হওয়া সিগনেচার ব্যাংক।
/এসএইচ



Leave a reply