করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট কতটা বিপজ্জনক? টিকা কি কাজ করছে?

|

ভারত-বাংলাদেশসহ আশপাশের দেশগুলোতে আবারও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মে মাসের শেষদিক থেকে শুরু হওয়া এই ঊর্ধ্বগতি উদ্বেগ বাড়িয়েছে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের।

এরইমধ্যে ভারতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়েছে NB.1.8.1 নামের একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট। এটি ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, চীন, থাইল্যান্ড ও হংকংসহ একাধিক দেশে। তথ্য আলজাজিরা’র।

কোন ভ্যারিয়েন্টে বাড়ছে সংক্রমণ?

মূলত NB.1.8.1 নামের একটি নতুন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এটি বর্তমানে চীন ও হংকংয়ে প্রাধান্য বিস্তার করেছে। ভারতের কিছু অঞ্চলে LF.7 নামের আরেকটি ভ্যারিয়েন্টও পাওয়া গেছে।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, দেশটিতে NB.1.8.1 ভ্যারিয়েন্টে ১৩টি নিশ্চিত রোগী পাওয়া গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, এপ্রিলের শেষ দিকে এ ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বজুড়ে জমা দেওয়া নমুনার ১০.৭ শতাংশে পাওয়া গেছে। মার্চে এই হার ছিল মাত্র ২.৫ শতাংশ।

নতুন ধরন NB.1.8.1 সম্পর্কে যা জানা গেছে

এই ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম শনাক্ত হয় ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে। এটি একটি সংকর ধরন, অর্থাৎ একাধিক বিদ্যমান ভ্যারিয়েন্টের জিনগত মিশ্রণ থেকে এটি উদ্ভূত হয়েছে।

চলতি বছরের ২৩ মে এই ভ্যারিয়েন্টকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘ভ্যারিয়েন্ট আন্ডার মনিটরিং’ হিসেবে ঘোষণা করে। তাদের সংজ্ঞা অনুযায়ী, এই ধরনের ভ্যারিয়েন্টে এমন জিনগত পরিবর্তন ঘটে যা ভাইরাসের আচরণ পরিবর্তন করতে পারে।

সংক্রমণ বাড়ছে কেন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, NB.1.8.1 ভ্যারিয়েন্টটি আগের তুলনায় দ্রুত ছড়ায়। অস্ট্রেলিয়ার ভাইরোলজিস্ট লারা হেরেরো জানিয়েছেন, ল্যাব পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই ভ্যারিয়েন্ট মানুষের কোষে সংক্রমণের ক্ষেত্রে বেশি দক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নেভাডার অধ্যাপক সুভাষ বর্মাও জানিয়েছেন, এটি আরও সংক্রামক।

উপসর্গ কী কী?

NB.1.8.1 ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে গলা ব্যথা, কাশি, শরীর ব্যথা, জ্বর, নাক বন্ধ বা সর্দি। অনেক সময় বমি বমি ভাব বা ডায়রিয়ার মতো পেটের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

টিকা কি কাজ করছে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকা এখনও কোভিডের বিরুদ্ধে কার্যকর। এটি গুরুতর অসুস্থতা, হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। তবে নতুন ভ্যারিয়েন্ট টিকা ও আগের সংক্রমণের মাধ্যমে গঠিত ইমিউনিটি আংশিকভাবে এড়িয়ে যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য সংস্থা বলছে, বর্তমান টিকাগুলো এই ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কতটা উদ্বেগজনক?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট আগের চেয়ে বেশি প্রাণঘাতী নয়। তবে এটি দ্রুত ছড়াতে পারে। করোনাভাইরাস যেহেতু সংস্পর্শে খুব দ্রুত ছড়ানোর শঙ্কা থাকে, তাই উপসর্গ দেখা দিলে টেস্ট করানো, মাস্ক পরা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন, তবে আতঙ্কিত না হতে বলছেন। নতুন ভ্যারিয়েন্ট হলেও এখন পর্যন্ত বড় কোনো বিপদের ইঙ্গিত মেলেনি।

/এমএমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply